লিপিকার আমিই তোমার, ঘুরে দাঁড়াও ব্যাবিলন, অগ্নিশ্বর
লিপিকার আমিই তোমার
তোমার কাছে ভালোবাসার প্রতিদান চাইনি
সারাক্ষণ নিরাপত্তা নীরব প্রহরী
তবু তুমি আমাকে ধন্য করেছ
আমার আমিত্ব সুপ্ত নিশ্চিত আশ্রয়
তোমার তৃপ্তির হাসি শুধুই সেদিকে চেয়ে;
অথচ সে হাসিটুকু আমাকে দেবার কথা ছিল
আমি তো চাইনি বিনিময়, আনন্দের সহবাস
এই ঘর, ইরানি কার্পেট, বসরাই গোলাপগুচ্ছ
সুমিষ্ট সুবাস—এসব কিছুই আমি চাইনি ।
তোমার আলিঙ্গনে প্রাণের আবিষ্কার, অফুরন্ত
কথার পঙ্ক্তিমালা অজান্তেই হয়েছে রচিত
মায়াময় সংসারের অন্তরালে একটি কবিতা
কখনও দেখনি! ধন্য লিপিকার আমিই তোমার
ঘুরে দাঁড়াও ব্যাবিলন
এখানেই ছিল সেই সুমেরীয় হাজার পাঁচেক বর্ষ আগে
চোখ বন্ধ করলেই সুমহান ঐতিহ্য-কঙ্কাল দেখি
স্বপ্নিল নগরী—মানববাগান—জ্ঞানের বিকাশ
হিংস্র দানবের নখের আঘাতে পাতালসমাধি।
তবুও কালের যাত্রাপথে বালুকণা স্ফুরে সুউচ্চ প্রাসাদ ওঠে
অনেক বছর পর আলোর সোপান বেয়ে জাগে ইতিহাস
আমি মনে রেখেছি তোমাকে ব্যাবিলন…
দর্শন বিজ্ঞান প্রযুক্তি তোমার পথ বেয়ে এখানে।
আমি সব দেখেছি, উত্তাল নদীর কূলে রক্তলাল কারবালা
তোমার কপালে বারবার নেমে আসা শ্বাপদের অভিশাপ
সভ্যতার আবরণে বর্বর উল্লাস, উন্মত্ত দানবের
মৃত্যু কামনায় আমি তোমার শুভার্থী একজন সুমেরীয়
ধ্বংস হোক অপশক্তি—প্রত্যাঘাতের সময় এখন।
তুমি বিজয়ী হও ব্যাবিলন! হারতে জানো না।
অগ্নিশ্বর
পুরাতন পৃথিবীর বর্বরতা কবে তো হয়েছে শেষ
পিপিলিকা পশুপাখি বিষাক্ত মক্ষিকা
প্রকৃতির বিধানের হাতে হাত রেখে
রেজিমেন্ট যূথবদ্ধ—নির্বিরোধ শান্তির প্রতীক
কী আগুন নিয়ে তুমি খেলছ বিস্ময়
সভ্যতার ধ্বজাধারী মখলুকাত।
হিংস্র আক্রোশে দানবের রক্তবীজ জন্ম দেয় উন্মত্ত সন্ত্রাসী।
দেখেও শেখে না, নিয়মের ব্যতিক্রম—অবশ্য বিনাশ।
অবিরত চারদিকে রক্তস্রোত বয়ে যায়
অবাক ধরণী! ধর্মনীতি আদর্শ সততা
পরাজিত বিবর্জিত মানুষের কাছে
মানুষের হাতে গড়া সুমহান আলোর সোপান,
বিমূর্ত হৃদয়ে ওঠে বিদ্রোহের ডাক
ক্ষয় হোক অভিশপ্ত আদম সন্তান
চিরঞ্জীব মর্তভূমে কালচক্রে শাশ্বত সময়ে
হয়তো আবার এসে পাথরে পাথর ঘষে
জ্বালাবে আগুন অনাগত ভবিষ্যৎ-শিশু।
আরও পড়ুন কবিতা-
ঝাপসা স্মৃতিগুলো
বিল গাজনার চিল
আমার যত ভালোবাসার ঋণ
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে