তবুও-ভালোবাসলাম-শেষ-পর্ব
গল্প,  সাহিত্য

তবুও ভালোবাসলাম (শেষ পর্ব)

তবুও ভালোবাসলাম (শেষ পর্ব)
শাহানাজ মিজান

 

ইমনের মা ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে ফারিহাকে একটু নরম ভাত খাওয়ালো, খাওয়ার সাথে সাথে বমি হয়ে গেল। ইমন আরো অস্থির হয়ে গেল। মাকে বারান্দায় ডেকে নিয়ে বললো- মা, ফারিহা কি বাঁচবেনা ? মা রেগে ওর দিকে তাকিয়ে চলে গেল। ইমন মনে মনে ভাবছে- সবাই শুধু আমার সাথেই কেন রাগ করছে? আমি তো বার বার ফারিহাকে বাসায় যেতে বলেছি, ও কেন গেল না।
আরো দুদিন পর, আজ ফারিহা অনেকটাই সুস্থ। ইমন ফারিহার হাত ধরে আছে।
ইমন: তুমি এখনো আমার উপর রেগে আছো? (হঠাৎ তুমি করে কথা বলছে)।
ফারিহা: কেন রেগে থাকবো না?
ইমন: কেন রেগে থাকবে? আমি বার বার তোমাকে বাসায় চলে যেতে বলেছি।
ফারিহা: কেন যাবো?
ইমন: (প্রশ্ন শুনে উঠে দাড়িয়ে ) আবার একই প্রশ্ন? কেন যাবে না, তুমি আমার স্ত্রী, আমার বাসায়ই তো তুমি থাকবে। তুমি জানো, তোমাকে ছাড়া আমার কত কষ্ট হয়েছে?
ফারিহা: কষ্ট হবে কেন?

আরও পড়ুন গল্প বিপরীত

ইমন: কষ্ট হবে না কেন? তোমাকে ছাড়া আমার কিচ্ছু ভালো লাগে নি, সবকিছুই শূন্য শূন্য লেগেছে।
ফারিহা: শূন্য লাগবে কেন? আমাকে তো তুমি ভালোবাস না। তুমি তো বন্যাকে ভালোবাস।
ইমন: (ফারিহার কাছে বসে, একটু ভেবে) তাইতো, আচ্ছা বন্যার জন্য আমার কখনো এমন লাগেনি কেন?
ফারিহা: কেমন?
ইমন: এই যে তোমার জন্য যেমন লাগে।
ফারিহা: বন্যাকে তুমি ভালোবাস না। তুমি শুধু আমাকে ভালোবাস। বন্যাকে তোমার ভালো লাগে, ওটা ভালোবাসা নয়। আর বুদ্ধরাম, যে কথাগুলো আজ বললে, সেই কথাগুলো এক মাস আগে কেন বল নি? তাহলে আমি দৌড়ে তোমার কাছে চলে যেতাম।
ইমন: সত্যি? এই তুমি এতো প্রশ্ন করো কেন বলো তো? আর তোমার প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারি না কেন?
ফারিহা: দিতে পারবে কেন?

আরও পড়ুন গল্প মামৃত্যু

এমন সময় ডাক্তার সুলতানা রুমে প্রবেশ করলেন। সাথে একজন নার্স। সমস্ত রিপোর্ট চলে এসেছে। ডাক্তার সুলতানা সবাইকে ডাকলেন। সবাই চিন্তিত মুখে ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে আছেন। ডাক্তার সুলতানা হাসি মুখে বললেন-ভয়ের কোন কারণ নেই, আপনাদের রোগী মা হতে চলেছেন। উনার শরীর অত্যন্ত দূর্বল। বেশি বেশি যত্ন নিবেন এবং সম্পূর্ণ বেডরেস্ট। অবশ্যই নিয়মিত চেকআপ করাবেন। আর চাইলে আজকেই আপনারা উনাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।
সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানালো। ফারিহা লজ্জায় দুহাত দিয়ে মুখ চেপ ধরে আছে। ওদের বাবা মা সবাই গেল ছাড়পত্র এবং অন্যান্য নিয়মকানুন সারতে। ইমন কিছুক্ষন অবাক হয়ে রইলো। ফারিহার হাত সরিয়ে দিয়ে বললো, কি বলছে ডাক্তার?
ফারিহা: যা সত্যি তাই বলছে।

ইমন: তুমি যে কনসিভ করেছ, এটা তুমি জানতে?
ফারিহা: তো, আমি একটা মেয়ে। আমি কনসিভ করেছি, সেটা আমি জানবো না?
ইমন: তাহলে আমাকে বলনি কেন?
ফারিহা: বলবো কেন?
ইমন: বলবে না কেন?
ফারিহা: এই তুমি কিন্তু এখন বেশি বেশি প্রশ্ন করছো, কেন?
ইমন: আমি তোমার মতো হয়ে গেছি তো তাই।

তবুও ভালোবাসলাম গল্পের-
১ম পর্ব
২য় পর্ব

 

ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজে

তবুও ভালোবাসলাম (শেষ পর্ব)

Facebook Comments Box

প্রকৌশলী আলতাব হোসেন, সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া ‘অন্তরের কথা’ লাইভ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক তিনি। সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ, কৃতি ব্যক্তিবর্গ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে ভালোবাসেন। বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি স্বনামধন্য ওয়াশিং প্লান্টের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশনে কর্মরত আছেন। তিনি ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত হাটখালি ইউনিয়নের সাগতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

error: Content is protected !!