জয়িতা শিল্পী
কবি, সাহিত্যিক ও পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও করে যাচ্ছেন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা। লিখছেন গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ। কাজ করছেন মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের নিয়েও। ইতোমধ্যে লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে।
জন্ম : জয়িতা শিল্পী ১৯৭৭ খিষ্টাব্দের ২৫শে মে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের অন্তর্গত চরদুলাই গ্রামের পুত্রবধূ তিনি।
পারিবারিক জীবন : স্বামী এটিএন বাংলার সিনিয়র নিউজ প্রডিউসর এএইচএম কামরুজ্জামান কামরুল। পুত্র ইথান রাইয়ানকে নিয়ে তাদের সংসার জীবন।
শিক্ষাজীবন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে পুলিশ সাইন্সে উচ্চতর (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্গমনোলজি বিভাগে মাস্টার্স ইন ক্রিমিনোলজি এন্ড ফিমিনাল জাস্টিজ এ উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অবস্থায় শামসুন্নাহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয়িতা শিল্পী আবৃত্তি, সংগঠন, মঞ্চনাটক, বাংলাদেশ বেতারসহ নানাবিধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন।
আরও পড়ুন কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল কুণ্ডু
কর্মজীবন : শিক্ষাজীবনে খণ্ডকালীন চাকরি, কলেজে শিক্ষকতা, এনজিওসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িত ছিলেন। একপর্যায়ে আত্মোপলব্ধি থেকেই স্বপ্ন দেখেন পাবলিক সার্ভিসে যুক্ত হওয়ার। ২৭তম বিসিএসে ২০০৮ সালে তিনি এএসপি হিসেবে সারদায় এক বছরের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর এএসপি সার্কেল ও এএসপি সদর পদে মাগুরা জেলায় যোগদানের মধ্য দিয়ে জনসেবামূলক এ প্রশাসনিক সংস্থার সঙ্গে যাত্রা শুরু করেন। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (কেএমপি) পুলিশ কমিশনারের স্টাফ অফিসার হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ২০১৩-১৪ খ্রিষ্টাব্দে আফ্রিকা মহাদেশে জাতিগত দ্বন্দেলিপ্ত যুদ্ধবিদ্ধস্ত কঙ্গোতে Female BANFPU-1, ROTETION 7 এর সদস্য হয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সাফল্যের সাথে অংশ গ্রহণ করেন এবং ‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা’ পদকে ভূষিত হন।
মিশন শেষে দেশে ফিরে যোগ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগে সহকারী কমিশনার (এডমিন শাখায়) হিসাবে। পরে ডিএমপি সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (লিগ্যাল এ্যাফেয়ার্স) হন। তিনি অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার হিসেবে ডিএমপি’র ক্রাইম কমাণ্ড এণ্ড কন্ট্রোল সেন্টারে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ময়মনসিংহ জেলার ডিএসবি, ক্রাইম ও প্রশাসন শাখায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-৪) ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন কবি, কথাশিল্পী ডা. আবু জাফর খান
লেখালেখি : কলেজ জীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতেখড়ি জয়িতা শিল্পীর।
প্রকাশনা : পুলিশে কর্মরত আছেন প্রায় এক যুগ। তবে কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। সংগ্রহ করেছেন দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। তুলে এনেছেন দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবহেলায় পড়ে থাকা বীরাঙ্গনাদের কথা। কর্মের পাশাপাশি লিখে চলছেন নিরন্তর।
কাব্যগ্রন্থ :
- জলে দাগ কেটে দিও (২০১৩ খ্রি.)
- উড়াল পাখি মন (২০১৮ খ্রি.)
- ঘরের মধ্যে ঘর শূন্য (২০১৯ খ্রি.)
- রক্তধারায় বঙ্গবন্ধু (২০২০ খ্রি.)
- করোনাময় সূর্যোদয় (২০২১ খ্রি.)
গল্পগ্রন্থ :
- মানুষের কথা (২০১৯ খ্রি.)
প্রবন্ধ :
- রাজারবাগে প্রজার পুলিশ (২০১৭ খ্রি.)
- বঙ্গবন্ধু একটি দর্শন ও বাংলাদেশ (২০২০ খ্রি.)
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক :
- ১৯৭১ সম্ভ্রমের স্বাধীনতা (২০২২ খ্রি.)
সম্মাননা :
- বাল্য বিবাহ বন্ধ করাসহ সাহিত্য অঙ্গনে অনন্য ভূমিকা পালন করায় রেঞ্জে বেশ কয়েকবার শ্রেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নির্বাচিত হয়েছেন।
- প্রশাসনের বিভিন্ন শাখায় গত এক যুগ ধরে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্বে পালনের সময় অর্জন করেছেন আইজি ব্যাজ (২০১৯ খ্রি.)।
- প্রথম লেখা ‘রাজারবাগে প্রজার পুলিশ’-এর জন্য ‘লেখক ও প্রাবন্ধিক সম্মাননা-২০১৭’।
- ‘উড়াল পাখি মন’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘উদীয়মান কবি, সম্মাননা-২০১৮’।
- ‘নিষ্পাপ নক্ষত্র’ কাব্যগ্রন্থে জন্য ‘বিশিষ্ট কবি ও গবেষক সম্মাননা-২০২০’।
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর-এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে