গাজনা-বিলের-ধান
কবিতা,  সাহিত্য

গাজনা বিলের ধান

গাজনা বিলের ধান

মো. শরিফুল ইসলাম

 

আমার এ সোনার ধান রবে কি মাঠে পরে?
যারে ফলবার জন্য আমি অঙ্গ দিয়েছি ঝরে
রাত নেই আমার, দিন নেই আমার, করেছি তারে যতন
যেনো দেখে বলে তারে হয়েছে মনের মতন।

কতো করেছি যতোন তার হতে দেয়নি রোগা
দেখলে কোন শঙ্কা সংশয় দিয়েছি কতো জোগা।
ডোপ কাঁধে নিয়ে কতো দিয়েছি ধানের ক্ষেতে বিষ
কতো নিড়ানি দিয়েছি আমি যতনে অহর্নিশ।

ফলবে সোনার ফসল আমার ঘুচবে মোর বেদনা
মুছে যাবে ক্লান্তি হতাশা যতো দূর্ভোগ যাতনা।
বারে বারে আসি ছুটে আমি দেখতে ইহার রূপ
আমার দিকে তাকিয়ে হাসে খলখল করে খুব।

দেখে আমার মন ভরে যায় এমনও মধুর হাসি
ছুটে আসি তার বুক পানে কতো যে ভালোবাসি।
যখন এ ধান নিতে চায় ওরা, কেড়ে আমার থেকে
হৃদয় আমার যায় ফেটে, কাঁদে মন ধুকে ধুকে।

কারে বলবো, কারে বলবো আমার এ দুখের কথা
যারে বলি সেজন আমারে দেয় আরও প্রাণে ব্যাথা।
কতো যে মানুষ খাবে আহা আমার এ ধানের ভাত
ঢেকুর তুলে ভুলবে ক্ষুধা হাসবে সুপ্রভাত।

সহজে কি হয়েছে, সেই ছোট থেকে এতো বড় বড় ধান?
এই বড় করবার পেছনে রয়েছে আমার, হাজারও ব্যাথার গান।
যতনে যতনে রতন মেলে, অবহেলায় হয় ক্ষয়
সাধনা সারথে সুনীল সুসনায় ধরিত্র হয় বিজয়।

ব্যঙ্গ করিলে যজ্ঞতা হয়, হয়গো সূর্য উদয়
দূরে চলে যায় ব্যজ্ঞ বিরান হয় সাধনার জয়।
একথা বলো ক’জন বোঝে, আজ করে শুধু হাস্যরাস
কিন্তু জানে না এর পিছনে লুকিয়ে আছে করুন ইতিহাস।

আরও পড়ুন কবিতা-
সাগর কন্যা
স্বপ্নবাড়ি
অযাচিত আহমিকা

 

ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

গাজনা বিলের ধান

Facebook Comments Box

মো. শরিফুল ইসলাম একজন প্রতিভাবান ছড়াকার ও কবি। তিনি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা ফেব্রুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত হাটখালি ইউনিয়নের দুড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর লেখনীতে গ্রামবাংলার সংস্কৃতি, প্রকৃতি, এবং সমাজের বিভিন্ন দিক ফুটে ওঠে। তিনি 'আমাদের সুজানগর' ওয়েব ম্যাগাজিনে লিখে থাকেন।

error: Content is protected !!