আমার-দুটি-হৃৎপিণ্ড
কবিতা,  পথিক জামান,  সাহিত্য

আমার দুটি হৃৎপিণ্ড, সুখের সন্ধান, একদিন অবশেষে

আমার দুটি হৃৎপিণ্ড

পথিক জামান

 

জীবন সায়াহ্নে এসে
কতকিছু ভাবি প্রগাঢ় অন্ধকারে
একাকী বসে বসে।
কী পেলাম কী পেলাম না
সে হিসেব মিলাতে পারিনি আজও।
ঘুম আসে না আগের মতো,
রাত যত গভীর হয়
আমার ভাবনাগুলো আরো
গভীরে বিচরণ করে
অলক্ষ্যে অগোচরে
নিশাচর পাখির মতো,
তারপর আবার ভোর হয়
সূর্য ওঠে,
আবার নতুন স্বপ্নবুনি।

আমার যে দুটি হৃৎপিণ্ড
দুপাশে নড়াচড়া করে একসাথে,
মায়া লাগায়,আরো মায়া,
ভাবি ওদের অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে,
কী হবে কী হবে না
ইত্যাদি ইত্যাদি।
ওদের চির মঙ্গল কামনায়
শুধু আমার প্রার্থনা
যেন দেখে যেতে পারি
দুটি উজ্জ্বল মুখের
জ্বলজ্বলে হাসি।

আরও পড়ুন কবি পথিক জামানের কবিতা-
বারবার ফিরে আসি
ঝড়ের পূর্বাভাস
আশায় বুক বাধি

 

সুখের সন্ধান

সত্যিকারের সুখ-শান্তি খুঁজে পাবে দানে
আর মানুষের ভালোবাসায়,
অথবা অন্য কোনো ভালো কাজে।
তবে উল্টো পথে কেনো করো
সুখের সন্ধান?

আকাশ ছুঁই ছুঁই অট্টালিকা গড়ে
অযথাই ছুটিছো সুখের সন্ধানে।
অত শূন্যে সুখের সন্ধান মিলবে না মোটেই।
ধুলির ধরায় গরিবের কুঁড়ে ঘরে
অথবা পলিথিনের ছাউনির বস্তিতে
করো তুমি সুখের সন্ধান।

ওরা প্রতিদিনই একবেলা আহার করে
পরের অন্ন পেয়ে,
কখনো তাও জোটে না
অন্ন ক্লিষ্ট দেহে।
জীর্ণ বস্ত্র পরে কোনোমতে লজ্জাটা নিবারণ করে
তোমাদের দেখে।

মায়াবী চোখের করুণ চাহনি
গলাতে পারে কি তোমাদের
পাষাণ হৃদয়?
তোমাদের এতটুকু দান, এতটুকু ভালোবাসা
দিতে পারে ওদেরও সুখের সন্ধান।

 

একদিন অবশেষে

কি সুন্দর এই পৃথিবী!
ভালোবাসি এর মাটি ও মানুষ,
ভালোবাসি আলো-বাতাস
আর তারা ভরা রাতের আকাশ।
এ ভালোবাসা আমার আজন্ম অধিকার।
স্নেহ মায়া মমতায় বেড়ে উঠলাম
ধীরে ধীরে শৈশব কেটে দূরন্ত কৈশোরে,

তারপর প্রদীপ্ত যৌবনে,
এক সময় অগোচরেই পৌঁছে গেছি প্রৌঢ়ত্বে।
তবুও ভালোবাসি সব,

আমার মায়ের সব সন্তানকে,
সবাইকে বেঁধেছি মায়ার ডোরে,
তাই এতজল টলমল করে দুচোখ ভরে,
অবশেষে অবেলায়,
এ মন যেতে চাইবে না জানি,
তবু্ও যেতে হবে,
সকল বাঁধন ছিন্ন করে
একদিন অবশেষে,
যেতে হবে ওপারে
ব্যথা নিয়ে বুকে
একদিন অবশেষে অবেলায়।

আরও পড়ুন কবিতা-
প্রকৃতিতে হবো লীন
সাবাশ বাংলাদেশ
স্মৃতি ছায়া
হেমন্তের বিকেল

 

 

ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

আমার দুটি হৃৎপিণ্ড

Facebook Comments Box

আলতাব হোসেন, সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত অলাভজনক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। তিনি ‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া ‘অন্তরের কথা’ লাইভ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক। সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ, কৃতি ব্যক্তিবর্গ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে ভালোবাসেন। তিনি ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। বর্তমানে একটি স্বনামধন্য ওয়াশিং প্লান্টের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশনে কর্মরত আছেন। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত হাটখালি ইউনিয়নের সাগতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

error: Content is protected !!