-
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (৪র্থ পর্ব)
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (৪র্থ পর্ব) সাইফুর রহমান এবারের অপারেশন হবে বনকোলা নামক গ্রামে। সেখানে জনা পঞ্চাশেক মিলিটারির একটি ক্যাম্প গঠিত হয়েছে। যেকোনো মূল্যে সে ক্যাম্পটিকে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। বনকোলা গ্রামটি একেবারে গাজনার বিলের তীর ঘেঁষে। সেই হিসেবে জলপথেই আক্রমণ সবচেয়ে সুবিধা ও নিরাপদ। তিনটি নৌকায় তোলা হলো মোট বিশ জন মুক্তিযোদ্ধা। দুটি ভাউলিয়া নৌকা ও একটি জেলে ডিঙি। ভাউলিয়া নৌকাটির পেছন থেকে অর্ধেক পর্যন্ত বাঁশের শক্ত চাতালের মতো ছই। সামনেরটুকু একেবারেই ফাঁকা। এতে করে বেশ সুবিধাই হয়। পাকসেনাদের নিয়োজিত অনুচরদের আর সন্দেহ থাকে না যে সেগুলোতে আসলে মুক্তিযোদ্ধারা লুকিয়ে আছে। ভাউলিয়া নৌকাটি ক্ষুদ্রাকার, অপ্রয়োজনীয় বাহুল্যবর্জিত ও হালকা। অপেক্ষাকৃত কম…
-
সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (শেষ পর্ব)
সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (শেষ পর্ব) সাইফুর রহমান জনবহুল এই ঢাকা শহরটিতে নিতাইয়ের আসা হয় বছরে কদাচিৎ। দূষিত বায়ু কিংবা পিঁপড়ার মতো ভিড় সমৃদ্ধ এই শহরটিতে দু’একবেলা যাপন করতেই হাঁপিয়ে ওঠে। মনটি তার ছটফট করতে থাকে কখন তিনি ফিরে যাবে গ্রামে। অনেক গলিঘুঁজি হাতড়ে পূর্ব শাহজাহানপুরে তেষট্টি নম্বর বাড়িটি অবশেষে খুঁজে পেল নিতাই। কড়া নাড়তেই পাতলা ছিপছিপে গড়নের মাঝ বয়সী একজন লোক দরজা খুলে নিতাইকে জিজ্ঞেস করল- -কাকে চাই? -স্যার কি আছেন নাহি ভিতরে? -আপনি কি আবু শামস স্যারের কাছে এসেছেন? -জী, উনাক কন, পাবনার গোলাম রসুল সাহেব আমাক পাঠায়ছেন। একটা জরুরী বিষয়ে উনার সাতে কতা কইবের চাই। লোকটি দরজাটা…
-
সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (১ম পর্ব)
সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা (১ম পর্ব) সাইফুর রহমান সাইকেলের বাঁ হাতলটিতে কিছুতেই হাতের মুঠোটি স্বস্থানে রাখতে পারছে না নিতাই। পিছলে যাচ্ছে শুধু বারবার। ভাদ্র মাসের ভ্যাপসা গরমে হাত দুটো ঘেমে একেবারে প্যাঁচ প্যাঁচে অবস্থা। শুধু হাত হবে কেন? এমন প্রচণ্ড গরমে পুরো শরীরটিই যেন ঘেমে নেয়ে একেবারে একাকার, সে এক বিশ্রী অবস্থা। সাইকেল নামক এই শকটটি যদিও বা একটু জোরে চালানো যেত তবুও না হয় কথা ছিল। নিদেনপক্ষে গরমের হাত থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যেত। কিন্তু সেই উপায়ই বা কোথায়? চরগোবিন্দপুর গ্রামের এই রাস্তাটি বড্ড দূর্গম ও এবড়ো-থেবড়ো। সাইকেলটি খুব সাবধানে ও ধীরে সুস্থে চালাতে হচ্ছে বলেই শরীরে গরমের…