মুক্তিযুদ্ধ
মুক্তিযুদ্ধ
-
আহম্মদপুর, কৃতি ব্যক্তিবর্গ, তাঁতিবন্ধ, দুলাই, নাজিরগঞ্জ, ভায়না, মানিকহাট, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, রানিনগর, সাগরকান্দি, সাতবাড়িয়া, হাটখালী
সুজানগর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা
সুজানগর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার পৌরসভা এবং ইউনিয়নভিত্তিক গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: সুজানগর পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: শহিদ আ. আউয়াল শহিদ ইব্রাহিম মোস্তফা কামাল দুলাল মো. তোফাজ্জল হোসেন (যুদ্ধাহত ) মো. শাহজাহান আলী মন্টু (যুদ্ধাহত ) শ্রী সুনিল কুমার সাহা মো. আব্দুস ছামাদ মো. আব্দুল হাই মো. আব্দুল কাদের মো. আব্দুল হামিদ মো. সুলতান মাহমুদ মো. আবুল কালাম আজাদ মো. মসলেম উদ্দিন মো. মোজাম্মেল হক চুন্নু মৃত আকবর আলী মো. আববাস আলী আব্দুল বাতেন শ্রী পরেশ চন্দ্র সাহা লিয়াকত আলী খন্দকার আবুল কালাম মো. সেলিম বদর মৃত হাবিবুর রহমান মো. ইয়াছিন উদ্দিন মো. আ. গণি মো. মনসুর রহমান…
-
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (শেষ পর্ব)
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (শেষ পর্ব) খলিফা আশরাফ যুদ্ধাহত মহিলা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ময়নার তখন আলাদা সম্মান। এলাকার মানুষের কাছে তার বীরের মর্যাদা। একদিনের অপাংতেয় ময়না এখন সকলের গর্বের প্রতিক। ক্র্যাচে ভর করা ময়নাকে যেদিন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হলো, অবাক হয়ে সে দেখলো তার জন্যে আয়োজন করা হয়েছে বীরোচিত সংবর্ধনা। প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে স্টেজ করা হয়েছে, দুপাশে বাঁশের মাথায় বাঁধা হয়েছে মাইক, তিনকোণা করে রঙ্গিন কাগজ কেটে আর বাংলাদেশের ছোট ছোট পতাকা দড়িতে আঠা দিয়ে লাগিয়ে দিয়ে সাজানো হয়েছে চারিদিক। উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে স্টেজ। তার উপর টেবিল, পেছনে কয়েকটা চেয়ার। মাঝখানের চেয়ারটা একটু বড়। উপরে সুন্দর একটা তোয়ালে বিছানো।…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (শেষ পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (শেষ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল হঠাৎ রাশেদ এসে ঢুকে দেখে, তার মা একজন অপরিচিত লোকের সাথে কথা বলছে। ইতোপূর্বে এ ধরনের লোককে এ এলাকায় কখনো নজরে পড়েনি। তার মা-র চোখে চোখ পড়তেই বলল, ── তোমাদের সভার কাজ শুরু করো। এই ভদ্র লোকের সাথে কথা বলে আসছি। একটু সময় লাগবে। রাশেদ কোন কথা না বাড়িয়ে বের হয়ে গেল। পঁত্রিশ বছর পর রাশেদার জীবনে কি ঘটেছিল, সে সব ঘটনা মাহি সুলতানের জানা ছিলো না। দীর্ঘ দশ বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরে গার্মেন্টস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। সময়ের সাথে সাথে ভুলে যায় অতীতের অনেক ঘটনা। একজন মানুষের জীবনে তো…
-
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (৩য় পর্ব)
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (৩য় পর্ব) খলিফা আশরাফ একদিন রাতে মধুকে তাঁর ঘরে ডেকে নিয়ে হাজি সাহেব বললেন, “ওই মধু তুই তো বহুতদিন আমার এইহানে কাম করছস। তর মেলা ট্যাকা জইমা গ্যাছে। আমারও বয়স হইচে। কহন কি হয়া যায় কয়া তো যায় না। আমি দেনা রাইখ্যা মরবার পারুম না। তর ট্যাকা তুই হিসাব কইরা লইয়া ল।” মধু কোন কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। লোকটাকে সে বাবার মতো শ্রদ্ধা করে। এই মানুষটা কখনো মধুকে কর্মচারীর মতো দেখেননি। সন্তান স্নেহেই আগলে রেখেছেন। বিশাল বাড়িতে তাঁর অন্য দুই ছেলের মতো মধুর জন্যেও আলাদা একটা রুম দেয়া হয়েছে। এক সময়ের নিরাশ্রয়…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৫ম পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৫ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল রাত নয়টার মধ্যে ভোট গণনা শেষ। সবগুলো নির্বাচনী কেন্দ্রের ভোট যোগফলে রাশেদ বেসরকারি ভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। তৃতীয় স্থানে অবস্থান সরকারি দলের প্রার্থী শমসের সুলতান ওরফে শমু সুলতান। স্থানীয় নেতাদের কোন্দলের ফসল। এমপি সাহেব রাশেদকে নীরব সমর্থন দিয়েছেন। রাশেদের পরিবারের সঙ্গে এমপি সাহেবের বাবার ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিলো, এখনো আছে। তাঁরা আজ কেউ জীবিত নেই। কিন্তু রেখে গেছেন সুসন্তান। আগামীকাল নতুন একটা সুর্য উঠবে, নতুন আলো নিয়ে। আর নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান নতুন পথ দেখাবে, এই ইউনিয়নের তরুণ সমাজকে। সকাল নয়টার মধ্যেই রহিম মাস্টার তার স্কুলের উদ্দেশে বের হলেন। তার স্কুল ভোট কেন্দ্র…
-
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (২য় পর্ব)
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (২য় পর্ব) খলিফা আশরাফ গরিব মুদি দোকানদার সহ-মুক্তিযোদ্ধা শফি সাহেব, তাঁর ঘরের বারান্দায় থাকতে দিয়েছেন বীর মহিলা মুক্তিযোদ্ধাকে। বাঁশের চাটাই দিয়ে চার পাশটা ঘিরে দিয়ে একটা ঘরের মতো করা হয়েছে। সেখানেই থাকেন তিনি। কোন ভাড়া দিতে হয় না। শুধু তিন বেলা খাবারের জন্যে প্রতি মাসে যা পারেন দেনতিনি। তাও ধরাবাঁধা কিছু নেই। কোন মাসে একেবারেই দিতে পারেন না। আবার কোন মাসে হয়তো প্রয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার পুরোটাই দিয়ে দেন। এ নিয়ে আশ্রয়দাতার কোন অনুযোগ বা চাহিদা নেই। একজন অসহায় সহ-মুক্তিযোদ্ধাকে যে তিনি সহযোগিতা করতে পারছেন, সেটাই বড় কথা তার কাছে। বরং সবিনয়ে তিনি বলেছেন, “আপা, আমি…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৪র্থ পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৪র্থ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল রাত আস্তে আস্তে গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে আর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটের শেষ অংক হিসেব কষে চলেছে। খান্দানি সুলতান পরিবার চায় ক্ষমতাসীনদের কাঁধে ভর দিয়ে আবার সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। আর অন্য দিকে একজন শিক্ষিত যুবক চায় একজন সৎ নিবেদিত এ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে দেশের সঠিক নেতৃত্ব দিতে। মাথায় শত চিন্তা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রাশেদ। ভোরে উঠতে হবে। আগামীকালের ভোটযুদ্ধে তাকে জিতে হবে, তবে নির্বাচনের মাধ্যমে। ভোট কারচুপি কাউকে করতে দেয়া হবে না। সকাল ৮টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। সব কেন্দ্রে সাহসী নির্লোভ পুলিং এজেন্ট দেয়া হয়েছে।…
-
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (১ম পর্ব)
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (১ম পর্ব) খলিফা আশরাফ বাসে করে মিরপুর যাচ্ছি। প্রচণ্ড ভিড়। সিট ছাড়াও গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছে অনেক যাত্রী। কয়েকজন মহিলা যাত্রীও রড ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। এমনিতেই তিল ধারনের জায়গা নেই, তারপর আরও যাত্রী তুলতে “মিরপুর-১১/১২, মিরপুর-১১/১২” করে চেঁচাচ্ছে হেল্পার। গরমে অতিষ্ঠ কয়েকজন যাত্রী ক্ষেপে উঠলো, “ঐ মিয়া যাত্রী কি তোমার মাথায় লইবা?” কয়েকজন তো রেগে খুব বিশ্রী ভাষায় গাল দিলো হেল্পারকে। কিন্তু হেল্পার ছেলেটা খুবই বেহায়া টাইপের। ওইসব নোংরা গালটাল গায়ে না মেখে দাঁত কেলিয়ে হাসছে সে। আবার গদগদ বিনয় দেখিয়ে বলছে, “রাগ কইরেন না সাব। একটু পিছায়া খাড়ান, কম কইরা আরও ১০ জন লওন…
-
সাইদ মো. আহসান হাবিব
সাইদ মো. আহসান হাবিব : একজন বীর যোদ্ধার কথকতা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী উত্তরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনসভায়, হালকা পাতলা ঝাকরা চুলের যে যুবকের বক্তৃতা জনতার মনে ঝড় তুলতো, তিনি আর কেউ নন ভাগ্যবিড়ম্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবিব।পুরো নাম সাইদ মো. আহসান হাবিব। সাধারণ মানুষের কাছে পাগলা হাবিব বলেই বেশি সমাদৃত। তিনি নিজ যোগ্যতায় তৎকালিন কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নজর কাড়েন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আহসান হাবিবকে অত্যন্ত আদরের সাথে বুকে টেনে নেন। ১৯৭২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নগরবাড়ি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ উদ্বোধনীতে লাখো জনতার সমাবেশে, আহসান হাবীবের বক্তব্য শুনে আবেগ আপ্লুত বঙ্গবন্ধু আহসান হাবিবকে হেলিকপ্টারে ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসায় নিয়ে যান।…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (১ম পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল গাজীপুরের কোনাবাড়ি পোশাক শিল্প এলাকা বলে খ্যাত। রাস্তার দুপাশ দিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীগুলো। পরপর নামগুলো পড়ে যাচ্ছে শমসের সুলতান ওরফে শমু সুলতান। একটা চারতলা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর সামনে এসে থমকে দাঁড়ায় সে। এখানে তার প্রথম আগমন। ঢাকায় বেশ কয়বার এসেছে কিন্তু কোনাবাড়িতে এই প্রথম পদার্পণ। বিপদে পড়ে এই খাটাস টাইপের লোকের কাছে আসা। সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। এক কালে প্রাণের বন্ধু ছিলো। প্রায় ত্রিশ-পঁত্রিশ বছর পর দেখা হবে। চেহারা কেমন হয়েছে কে জানে। গার্মেন্টসের মালিক। ভবনের ওপর লেখা আছে মাহি গার্মেন্টেস ফ্যাক্টরী। সহজেই মিলে গেল সোনার চাঁদ হরিণ। আসার…