স্বাধীনতার-তিক্ত-স্বাদ
কবিতা,  জাহাঙ্গীর পানু

স্বাধীনতার তিক্ত স্বাদ, বিপ্লবের সওয়ারীরা

স্বাধীনতার তিক্ত স্বাদ

জাহাঙ্গীর পানু

উন্মুক্ত স্বাধীনতার তিক্ত স্বাদে বাধাহীন সমাজের আত্ম-অহংকারীর।
দিকপালবিহীন মৌমাছিরা হুল ফোটায় ভুল মগডালের অগ্রভাগে।
অবুঝ সময়ের হারানো স্বাধীকার ফিরে পাবার আহলাদে উত্তেজিত নব প্রজন্ম।

প্রতিবিপ্লবের আকাঙ্খায় উৎ পেতে থাকে ভয়ানক হিংস্র হায়েনারা
আচমকাই গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে পতিত বিষধর গোখরো।
অনবরত সাম্রাজ্যবাদী পড়শির খড়গ হস্তের ইশারায় লাল হয় সবুজ ঘাস।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার স্বপ্নে বিভোর পরাজিত পাপারাজ্জিদের দল।
দীপ্তদের আত্মার চিতার আগুনে নোংরা জল ঢালে বিপথগামী স্বগোত্রীয় উগ্রবাদীরা।

সমাজের প্রতিষ্ঠিত কান্ডারীগণ আজ দিশাহারা
দ্বিধাহীন প্রলাপের ভিতরে তারা আজ উদ্দেশ্যহীন যাত্রার পথিক।
স্বৈরাচারের চরমপত্রের অনুশীলনে শেখেনি কোনোকিছুই।
সদ্য ফেলা অতীতের যন্ত্রণাময় দিনগুলোর তিক্ত অভিজ্ঞতা কি সহসাই ভুলে গেল?

আরও পড়ুন জাহাঙ্গীর পানুর-
অন্ধকারের জ্যোতি
স্বপ্ন সারথি
শ্বাশত বাণী

 

বিপ্লবের সওয়ারীরা

সেদিন-
রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছিল
ফ্যাসিস্টের কালো হাত।
অজস্র অরাজকতার বিদ্রোহের ধাক্কায়
কেঁপে ওঠে বেওয়ারিশ সিংহাসন।
উন্মত্ত আগুনের লেলিহান শিখায়
আচমকা পথ চলে বিপ্লবের সওয়ারীরা।
মায়ের আব্রুর সৌন্দর্য সুরক্ষার প্রয়াসে
দাঁতের মাড়িতে চেপে রাখে নিঃস্তদ্ধ গভীর রাতের আঁধারের কষ্ট;
একটি রৌদ্রপ্রসন্ন সোনালি সকালের প্রত্যাশায়।
অন্ধকারের গা ছুয়ে উঠে আসে
সাদা মেঘে ভাসা শরতের আকাশ।

স্বৈরাচারের অপঘাতে, দৃষ্টিহীন হয়েছে যে চোখ
অশ্বথ বৃক্ষের মতো দন্ডায়মান হারানো দুটি পা
অথবা বলিষ্ঠ হাতের প্রশাখারুপ করযুগল
তারা যেন আজ সমাজের অনাহুত অতিথি।
মুখ লুকিয়ে কাঁদে বিষণ্ণ সন্ধ্যার আকাশ
রাতের নির্ঘুম প্রহরীর কাছে করে প্রতিবাদ
মহাশক্তির প্রসারিত আসমানের দুয়ারে পাঠায় অভিযোগে।
চোখের নোনা জলের ফোটায় উত্তপ্ত ফুসে ওঠে মৃত্তিকা,
আবার শুকিয়ে যায় প্যালেস্টাইনের মরুঝড়ে।

আরও পড়ুন কবিতা-  
একুশ তুমি
ভাষা শহিদ স্মরণে
কলকাকলি

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও  ইউটিউব চ্যানেলে

স্বাধীনতার তিক্ত স্বাদ

Facebook Comments Box

কবি জাহাঙ্গীর পানু—এক নিরন্তর পথিক, যাঁর কলম চলে জীবনের বিভিন্ন বাঁকে। তাঁর লেখালেখির কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই; সময়, প্রাসঙ্গিকতা এবং অন্তরের আকর্ষণই তাঁকে পথ দেখায়। তিনি শব্দের মাঝেই খুঁজে নেন জীবনের গভীরতাকে, যেখানে প্রতিফলিত হয় তাঁর অনুভূতির মগ্নজগৎ। তাঁর সৃষ্টিকর্মে গ্রামীণ জীবনের স্নিগ্ধতা, প্রকৃতির মমতা, আর মানুষের অন্তর্লীন আবেগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কখনো তাঁর রচনায় দেখা মেলে গ্রামবাংলার উর্বর মাটির টান, কখনোবা সংস্কৃতির রঙিন বৈচিত্র্য। প্রতিটি লেখায় তিনি সময়ের চিহ্ন ধরে জীবনের মায়াজাল বুনে চলেন। তিনি নিয়মিত লিখছেন ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিনে, যেখানে তাঁর লেখাগুলোর মাধ্যমে পাঠক খুঁজে পান নতুন এক ভাবনার দিগন্ত। তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ “বিষণ্ণতার নীল চাদর” এক অনন্য সংকলন, যেখানে বিষণ্ণতার নীল ছায়ায় ঢাকা জীবনের নানা রূপ, অনুভূতি আর প্রতিফলন মূর্ত হয়ে উঠেছে। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের উলাট গ্রামে জন্ম নেওয়া কবি জাহাঙ্গীর পানু প্রকৃতির স্নেহছায়ায় বেড়ে ওঠা এক সৃষ্টিশীল কবি। তাঁর লেখায় আজও মেলে সেই মাটির গন্ধ আর শেকড়ের টান।

error: Content is protected !!